সার্কেলচীফ জেলার প্রশাসন সংক্রান্ত বিষয়ে ডেপুটি কমিশনারকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন।তিনি একটি উপদেষ্টা কাউন্সিল গঠন করেন এবং কাউন্সিলের সুপারিশ অনুসারে তিনিডেপুটি কমিশনারকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন (বিধ নং-৩৯)।
তিনিমৌজা হেডম্যান নিয়োগ ও অপসারণে ডেপুটি কমিশনারকে পরামর্শ দিয়ে থাকেস, যদিওডেপুটি কমিশনার তাঁর পরামর্শ মেনে নিতে বাধ্য নন। তবে তাঁর পরামর্শসর্বোচ্চ বিবেচনার দাবি রাখে (বিধি নং৪৮)।
মৌজাহেডম্যান কর্তৃক খাজনা আদায় ও এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখাসহ অপরাধদমনে তাদের প্রতি আদেশ, নির্দেশ ও পরামর্শ প্রদান তাঁর দায়িত্বের আওতাধীন(বিধি নং-৩৮)।
মৌজা হেডম্যান কর্তৃক আদায়কৃত খাজনা সরকারি কোষাগারে জমাদান নিশ্চিত করা তাঁর অন্যতম প্রধান দায়িত্ব (বিধি নং-৩৮)।
এলাকারজণগণের মধ্যে শিÿা বিসত্মার ও স্বাস্থ্য সচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যক্তিগতপ্রভাব বিসত্মার করাও তাঁর একটি গুরম্নত্বপূর্ণ দাইয়ত্ব (বিধি নং-৩৮)।
ডেপুটিকমিশনারের আদালতে বিচারাধীন মামলায় প্রথাগত আইন সামাজিক রীতিনীতির কোনোব্যাখ্যার প্রয়োজনে ডেপুটি কমিশনার সংশিস্নষ্ট সার্কেল চীফ/রাজার নিকটমতামত আহবান করলে তিনি তাঁর ব্যাখ্যা ও মতামত দিয়ে থাকেন (বিধি নং-৪০)।
তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ আইন অনুযায়ী প্রাপ্তÿমতাঃ
১৯৮৯সানের তিন পার্বত্য জেলা পরিসদ আইনে (১৯, ২০ ও ২১ নং আইন) প্রদত্ত ÿমতাবলেসংশিস্নষ্ট সার্কেল চীফ পরিষদের যে কোন সভায় যোগদঅন ও সভার আলোচ্য বিষয়েমতামত ব্যক্ত করতে পারবেন। (ধারা নং-২৬)।
মৌজা গঠন ও হেডম্যান নিয়োগ প্রথাঃ
১৮৯২সনের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধির ৪নং বিধিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের ৩৩টিতালুককে ১.৫ থেকে ২০ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে মৌজায় বিভক্ত করার ব্যবস্থা রাখাহয়। এই বিধি মোতাবেক মৌজা ব্যবস্থায় উদ্ভব ঘটে। ১৯০০ সনের পার্বত্যচট্টগ্রাম শাসন বিধির (হিল ট্রাক্টস ম্যানুয়েল) ৩৭ নং বিধিতে তিনজন রাজার৩টি সার্কেলকে মৌজায় বিভক্ত করার পুনঃবিধান করা হয়। সেই একই বিধিতেপ্রত্যেক মৌজায় ১ জন করে মৌজা হেডম্যান নিয়োগের বিধান রাখা হয়। তিনপার্বত্য জেলার তিনটি সার্কেল বর্তমানে ৩৯০ টি মৌজায় বিভক্ত।
হেডম্যান নিয়োগ পদ্ধতিঃ
পার্বত্যচট্টগ্রাম শাসন বিধির ৪৮ নং বিধি মতে সার্কেল চীফের (রাজা) সাথে পরামর্শকরে ডেপুটি কমিশনার মৌজা হেডম্যান নিয়োগ করবেন, যদিও ডেপুটি কমিশনার তাঁরপরামর্শ মেনে নিতে বাধ্য নন। তবে তাঁর পরামর্শ সর্বোচ্চ বিবেচনার দাবী রাখেহেডম্যান পদটি বংশানুক্রমিক নয়। তবে হেডম্যানের উপযুক্ত পুত্র হেডম্যানপদে নিয়োগ লাভের বেলায় অগ্রাধিকারের দাবী রাখেন।
হেডম্যান এর ÿমতা ও কার্যাবলীঃ
ক.১৯০০ সনের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধির ৩৮ নং বিধিতে প্রদত্ত ÿমতাবলেমৌজা হেডম্যান নিষ্ঠার সাথে তার মৌজার জন্য নির্ধারিত খাজনা আদায় করবেন এবংমৌজার বকেয়া খাজনার হিসাব রাখবেন। তিনি ডেপুটি কমিশনার, মহকুমা প্রশাসক(বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার) এবং সার্কেল চীফ এর আদেশ মেনে চলবেন।তিনি তার মৌজায় শামিত্ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন এবং মৌজায় চাষাবাদের আওয়াতাধীনএলাকার (আয়তনের) কোনো পরিবর্তন ঘটলে তৎসম্পর্কে ডেপুটি কমিশনারকে অবহিতকরবেন।
খ.১৯০০ সনের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধির ৪১ নং বিধিমতে হেডম্যান তাঁর জুমচাষ নিয়ন্ত্রণ করবেন। ৪২ নং বিধিমতে তাঁর মৌজায় বসবাসকারী জুমিয়া জমিরমালিক তথা জুম চাষীদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করবেন। তিনি পরিবার প্রধানেরনাম ও সদস্য সংখ্যা, খাজনা পরিশোধকারী কিংবা খাজনা পরিশোধ অব্যাহতি প্রাপ্তনতুন বা পুরাতন পরিবার ইত্যাদি সংক্রামত্ম তথ্য সম্বলিত একটি জুম তৌজি(জুমিয়া তথা জুম চাষীর তালিকা) প্রস্ত্তত করে প্রত্যেক বছর ১লা জুনের আগেসার্কেল চীফ তথা রাজার কাছে দাখিল ডেপুটি কমিশনারের কাছে রাজাকে দাখিল করতেহবে। হেডম্যানের (খাজনার) দাবীর অমত্মতঃ ৫০% রাজপূণ্যহর দিন এবং অবশিষ্টঅংশ পরবর্তী বছরের ১লা জানুয়ারীর মধ্যে সার্কেল চীফের কাছে পরিশোধ করবেন।হেডম্যান যদি মনে করেন যে, কোনো প্রজা জুম খাজনা প্রদান থেকে রেহাই পাবারজন্য অন্যত্র পালিয়ে যাবার প্রস্ত্ততি নিচ্ছে, তাহলে তিনি সেই চীফ ও ডেপুটিকমিশনারকে জানাবেন। যদি কোনো হেডম্যান অনুরূপ ব্যবস্থা্ গ্রহণে অবহেলাকরেন, তাহলে সেই প্রজার অনাদায়ী খাজনার জন্য তিনি দায়ী হবেন। ৪৩ বিধিমতেতিনি ঘাস (শনখোলা) ও গর্জনখোলার খাজনা এবং ৪৫ (বি) বিধিমতে গোচারণ ভূমিরট্যাক্স আদায় করবেন।
মৌজার প্রাকৃতিক সম্পদ সংরÿণের দায়িত্বঃ
পার্বত্যচট্টগ্রাম শাসন বিধির ৪১ (এ) বিধানমতে মৌজা হেডম্যান তাঁর মৌজার প্রাকৃতিকসম্পদ সংরÿণের দায়বদ্ধ।এই উদ্দেশ্যে তিনি নিমেণাক্ত পদÿÿপ নিবেন।
ক.কোনো মৌজাবাসীকে গৃহস্থালী কাজ ব্যতীত অন্য কোনো কাজে মৌজার বনজ সম্পদ, যথাঃ বাঁশ, কাঠ, বেত ইত্যাদি অন্য কোনো কিছু অপসারণ এবং অনিবাসী ব্যক্তিদ্বারা অনুরূপ কোনো কিছু অপসারণের কাজে তিনি নিষেধাজ্ঞা জারী করতে পারবেন।
খ. মৌজাস্থ কোনো এলাকা/এলাকা বিশেষের বনজ সম্পদ সংরÿনের নিমিত্তে ঐ এলাকাকে জুম চাষের আওতামুক্ত ঘোষণা করতে পারবেন।
গ.যদি হেডম্যানের বিবেচনায় নবাগত কেই তাঁর মৌজায় জুম চাষ করলে পরবর্তী বছরমৌজাবাসীর জুম চাষে জমির সংকট দেখা দেবে মনে হয়, তাহলে তিনি তাঁর মৌজায়নবাগতদের জুম চাষ নিষিদ্ধ করে দিতে পারবেন।
ঘ.জুম চাষের জন্য ÿতিকর প্রতীয়মান হলে হেডম্যান তাঁর মৌজায় গোচারণ নিষিদ্ধ করে দিতে পারবেন।
বসত বাড়ি জন্য জমি বন্দোবসত্মী/দখলে অনুমতি প্রদানের ÿমতাঃ
জেলাপ্রশাসকের আনুষ্ঠানিক বন্দোবসত্মী ব্যতিরেকে পৌর এলাকা বহির্ভূত মৌজায়মৌজা হেডম্যান তার মৌজার কোনো পাহাড়ি বাসিন্দাকে বসতবাড়ি নির্মাণের জন্যসর্বোচ্চ ০.৩০ একর জমি ভোগ দখলে রাখার অনুমতি দিতে পারেন। তবে এসব বসতবাড়ীরজন্য দখলভূক্ত জমির হিসাব রাখার জন্য তাকে একটা আলাদা রেজিষ্টার তৈরি করেরাখতে হবে )বিধি নং-৫০ (১)।
ভূমিঃসরকারী ভূমি বন্দোবসত্মী, হসত্মামত্মর, বিভক্তি এবং পুনঃ ইজারা প্রদানেরÿÿত্রে সংশিস্নষ্ট মৌজা হেডম্যানের সুপারিশ প্রদানের ÿমতা (৩৪) (১) বিধি।
হেডম্যান অপসারণঃ
পার্বত্যচট্টগ্রাম শাসন বিধির ৪৮ নং বিধিতে প্রদত্ত ÿমতাবলে ডেপুটি কমিশনার যেকোনো মৌজা হেডম্যানকে অযোগ্যতা ও অসদাচরণের কারণে সার্কেল চীফকে জানিয়েহেডম্যান পদ থেকে অপসারণ করতে পারবে।
ব্যাখ্যাঃআদিবাসী জনগোষ্ঠীর গ্রাম বা পাড়া পর্যায়ের কার্বারী পদ চাকমা সমাজেওপ্রচলিত রয়েছে। যদিও পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধিতে কার্বারী পদের উলেস্নখনেই, তবে পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনে কার্বারী পদের উলেস্নখ রয়েছে। কিন্তুকার্বারীর ÿমতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে পার্বত্য পরিষদ অদ্যাবধি কোনো বিধবিধান প্রণয়ন করেনি।
সার্কেল চীফ ও হেডম্যানের বিচারিক ÿমতাঃ
১৯০০সনের পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশনের ১৮ ধারাবলে প্রণীত পার্বত্য চট্টগ্রামশাসন বিধির ৪০ বিধিতে ভিন্ন কিছু উলেস্নখ না থাকলে, মৌজা হেডম্যানগণসংশিস্নষ্ট মৌজার অধিবাসী কর্তৃক আনীত বিরোধীয় সকল বিষয়ের উপর বিচারপূর্বকসিদ্ধামত্ম প্রদান করবেন।
তারাসংশিস্নষ্ট পÿদ্বয়ের প্রচলিত সামাজিক রীতি অনুসারে আদিবাসীমোকদ্দমাসসমূহের বিচার করবেন। এ ধরনের বিচারে হেডম্যান সর্বোচ্চ ২৫ টাকাপর্যমত্ম জরিমানা করতে পারবেন এবং অন্যায়ভাবে সংগৃহীত বা চোরাই মালামালফেরত পারবেন বাধ্য করতে পারবেন। তা ছাড়া এতদবিষয়ে জেলা প্রশাসকের আদেশ নাপাওয়া পর্যমত্ম দোষী ব্যক্তিকে আটক রাখবার আদেশ দিতে পারবেন।
এইবিধতে ভিন্ন কিছু বর্ণত না থাকলে সার্কেল চঅফ, খাস মৌজার হেডম্যান হিসেবেতাদের নিকট মীমাংসার জন্য উপস্থাপিত বিরোধী সকল বিষয়ের উপর বিচার পূর্বকসিদ্ধামত্ম প্রদান করতে পারবেন। অনুরূপ আদিবাসী বিরোধসমূহ, যা হেডম্যানদেরসিদ্ধামেত্মর প্রেÿÿতে প্রেরিত বা হেডম্যানগণ নিজেরাই দাখিল করেছেন সেইবিরোধগুলোও সার্কেল চীফ একইভাবে বিচার নিষ্পত্তি করবেন।
সার্কেলচীফ ৫০টাকা পর্যমত্ম জরিমানা করতে পারবেন এবং অবৈধভাবে লব্ধ কোনোজিনিস/মালামাল ফেরত প্রদানে বাধ্য করতে পারবেন। এছাড়া সংশিস্নষ্ট বিষয়েরউপর জেলা প্রশাসকের আদেশ না পাওয়া পর্যমত্ম দোষী ব্যক্তিকে আটক রাখবার আদেশদিতে পারবেন।
আদিবাসীমামলায় রায়সমূহের রিভিশন পর্যায়ের সাধারণ অধিÿÿত্র হিসেবে জেলা প্রশাসকেরসিদ্ধামত্মই চূড়ামত্ম বলে গণ্য হবে। সার্কেল চীফ অথবা হেডম্যান কর্তৃকপ্রদত্ত কোনো মামলার রায়ে আরোপিত শাস্বিত তারা কার্যকর করতে ব্যর্থ হলেআরোপিত শাসিত্ম কার্যকর করবার জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করতে পারবেন।
সার্কেলচীফ অথবা হেডম্যানগণ কর্তৃক বিচার্য মোকদ্দমায় কোনো কোর্ট ফি প্রদান করতেহবে না। এরূপ মামলায় আরোপিত জরিমানা সংÿুদ্ধদের মাঝে (যদি থাকে) এবংসামাজিক প্রথা অনুসারে সমষ্টিগতভাবে গ্রামীন সম্প্রদায়ের মধ্যে বন্টন করেদিতে হবে। সামাজিক রীতিসিদ্ধ হলে সমষ্টিগতভাবে বাটোয়ারকৃত অনুরূপ জরিমানারসমপরিমাণ অংশ সার্কেল চীফ এবং হেডম্যানও পাবার অধিকারী। কিন্তু যেভাবেই হোকনা কেন, কোনো নজরানা বা বিচার সম্পর্কিত বিষয়ের জন্য প্রয়োজন এই অজুহাতেঅন্য কোনো কিছু আরোপ করা যাবে না।
তবেশর্ত থাকে যে, সার্কেল চীফ অথবা হেডম্যানগল জেলা প্রশাসকের অনুমোদনক্রমেবিচার সম্পর্কিত ব্যয় নির্বাহের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ফিস আদায় করতেপারবেন।
মমত্মব্যঃসার্কেল চীফ ও মৌজা হেডম্যান কর্তৃক আদিবাসীদের সামাজিক বিরোধ নিষ্পত্তিরএই ÿমতা তৎকালীন জেলা প্রশাসক এস.জেড খানের স্মারক নং ১২৩৪(৪০০)/সিরাঙ্গামাটি, তারিখঃ ৫ মে ১৯৬৪ মূলে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে স্বীকার করা হয়েছে।
সময়েসময়ে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ÿমতাপ্রাপ্ত না হলে, সার্কেল চীফ অথবাহেডম্যানগণ নিমেণর আলোচ্য বিধি মোতাবেক তাদের নিকট বিছারের নিমিত্তেউপস্থাপিত আদিবাসী মামলা ব্যতীত অন্য কোনো ফৌজদারী বা দেওয়ানী মামলার বিষয়েÿমতা প্রয়োগের অধিকারী হবেন না।
এইবিধি অনুযায়ী সার্কেল চীপ এবং হেডম্যানগণের সকল রায়ের উপর সিদ্ধামত্মপ্রদানের ÿÿত্রে জেলা প্রশাসকের রিভিশনাল ÿমতা এবং সমন্বিত অধিÿÿত্র থাকবে।
নিমেণ নির্দিষ্টকৃত অপরাধসমূহ অত্র বিধিমতে সার্কেল চীফ ও হেডম্যানের বিচার ÿমতা বহির্ভূত, যথাঃ
ক.রাষ্ট্রের বিরম্নদ্ধে অপরাধ, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অধীনে কর্মরতব্যক্তির বিরম্নদ্ধে অপরাধ অথবা গণনীতির বিরম্নদ্ধে অপরাধ।
খ.মারণাস্ত্রসহ সংঘটিত দাঙ্গা অথবা আঘাতের কারণ হতে পারে এমন দাঙ্গা।
গ.ব্যক্তির বিরম্নদ্ধে সংঘটিত নিমেণ বর্ণিত অপরাধ যথাঃ খুন, অপরাধমূলকনরহত্যা, ইচ্ছাকৃতভাবে কৃত গুরম্নতর আঘাত, অবৈধ অবরোধ, ধর্ষণ, অপহরণ, মনুষ্যহরণ এবং অস্বাভাবিক অপরাধসমূহ।
ঘ.বলপূর্বক সম্পত্তি গ্রহণ, দস্যুতা, ডাকাতি, অপরাধমূলক অনাধিকার প্রবেশ, গৃহে অনাধিকার প্রবেশ, অপথে গৃহে প্রবেশ (যখন ৫০ টাকার অধিক মূল্যেরসম্পত্তি জড়িত থাকে)।
ঙ. জালিয়াতি।
চ.১৯০০ সনের পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশনের ৪র্থ পরিচ্ছেদে বর্ণিত ১১ ধারা(আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারম্নদ দখলে থাকা এবং বারম্নদ প্রস্ত্তত করা), ১২ ধারা(দা, বলস্নম, তীর, ধনুক ইত্যাদি জেলা প্রশাসক কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষণা করারপর হেফাজতে রাখা),১৩ ধারা (বিষাক্ত মাদক হেফাজতে রাখা), ১৪ ধারা (বিদেশীস্পিরিট ও চোরাই মদ জেলা প্রশাসকের প্রদত্ত লাইসেন্স ব্যতিরেকে হেফাজতেরাখা), ১৫ ধারা (স্থানীয়ভাবে প্রস্ত্ততকৃত স্পিরিট ও চোলাই মদ লাইসেন্সব্যতিরেকে বিক্রয় করা) ইত্যাদি অপরাধ। (বর্তমানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন১৯৯০ সনের ২০ নং আইনের {১০ (২) (খ) ধারায় নিমণরূপ শর্তাংশ সংযোজিত হয়েছেঃরাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাসমূহের আদিবাসীগণ কর্তৃকঐতিহ্যগতভাবে প্রস্ত্ততকৃত মদ,উক্ত জেলাসমূহের আদিবাসীগণ কর্তৃক পান করারÿÿত্রে, এই উপধারার কোন কিছুই প্রযোজ্য হবে না}।
ছ. জেলা প্রশাসক কর্তৃক নির্ধারণ করে দেয়া হবে সে সকল বা সে শ্রেণীর অন্যান্য অপরাধ।
১৯০০ সনের পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন এর সংশোধনী (২০০৩ সনের ৩৮ নং আইন) আইনের ৪ (৪) ধারার বিধান নিমণরূপঃ
যুগ্মজেলা জজ জেলার দেওয়ানী মোকদ্দমা সংক্রামত্ম ব্যাপারে আদি অধিÿÿত্রে হিসেবেপ্রচলিত আইন, প্রথা, রীতিনীতি অনুসারে বিচার কার্যক্রম সম্পাদন করবেন। তবেআদিবাসীদের মধ্যেউদ্ভূত পারিবারিক ও প্রথাগত আইনের বিষয়ে যুগ্ম জেলা জজেরপরিবর্তে সংশিস্নষ্ট মৌজার হেডম্যান ও সার্কেল চীফের বিচারালয়ের মাধ্যমেতা নিষ্পন্ন হবে।
পার্বত্যজেলা পরিষদ আইনের (১৯৮৯ সনের ১৯, ২০, ও ২১ নং আইন) ৬৬ ধারায় সার্কেল চীফবা মৌজা প্রধান কর্তৃক বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রামত্ম বিধান নিমণরূপঃ
ক.সংশিস্নষ্ট পার্বত্য জেলার বসবাসকারী এমন আদিবাসীদের মধ্যে কোনো সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা পারিবারিক বিষয়ে বিরোধ দেখা দিলে বিরোধটি নিষ্পত্তির জন্যস্থানীয় কার্বারী বা হেডম্যানের নিকট উপস্থাপন করতে হবে এবং তিনিসংশিস্নষ্ট আদিবাসীগণের মধ্যে প্রচলিত রীতিনীতি অনুযায়ী বিরোধের নিষ্পত্তিকরবেন।
খ.কার্বারীসিদ্ধামেত্মর বিরম্নদ্ধে হেডম্যান, হেডম্যানের সিদ্ধামেত্মর বিরম্নদ্ধেসংশিস্নষ্ট সার্কেল চীফ এবং সংশিস্নষ্ট সার্কেল চীফের সিদ্ধামেত্মরবিরম্নদ্ধে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিষনারের নিকট আপীল করা যাবে এবং কমিশনারেরসিদ্ধামত্ম চূড়ামত্ম বলে গণ্য হবে।
গ.সার্কেল চীফ বা কমিশনার কোনো আপীল নিষ্পত্তির পূর্বে সংশিস্নষ্ট আদিবাসীহতে তৎকর্তৃক মনোনীত অনূন্য ৩ জন ব্যক্তির সাথে পরামর্শ করবেন।
ঘ. সংশিস্নষ্ট জেলা পরিষদ প্রবিধান দ্বারা এই ধারায় উলেস্নখিত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য-
ব্যাখ্যাঃবৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলাকে তিন পার্বত্য জেলা রূপে প্রশাসনিকবিভক্তির পর বর্তমানে আদিবাসী সমাজের জাতীয় প্রধান হলেন বান্দরবান পার্বত্যজেলাতে বোমাং চীফ, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে মং চীফ এবং রাঙ্গামাটিপার্বত্য জেলার চাকমা চীফ। উলেস্নখ্য যে, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলাররাজস্থলী ও কাপ্তাই উপজেলা বোমাং সার্কেলের অমত্মর্ভূক্ত, অনুরূপভাবেখাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার দীঘিনালা ও লÿীছড়ি উপজেলা সার্কেলের অমত্মর্ভূক্ত, যে কারণে ১৯০০ সনে পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধির ৪০ বিধিমতে সংশিস্নষ্টজেলা প্রশাসকগণকে বোমাং ও চাকমা সার্কেলে উদ্ভূত আদিবাসী সমাজের ব্যক্তিগত ওপারিবারিক বিষয়ে উদ্ধৃত বিরোধ নিষ্পত্তির ÿÿত্রে জেলার অধিÿÿত্রের বাইরেহওয়ায় অনেক সময় আদালতের অধিÿÿত্রের প্রশ্নে আইনী জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়, যদিও সংশিস্নষ্ট সার্কেল চীফ স্ব-স্ব সার্কেলের প্রধান হিসেবে সমাজেরসমাজপতি। ১৯০০ সনের পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন এর সংশোধনী (২০০৩ সনের ৩৮নং আইন) আইনের ৪ (৪) ধারায় আদিবাসীদের মধ্যে উদ্ধৃত পারিবারিক ও প্রথাগতআইনের বিষয়ে সংশিস্নষ্ট মৌজা ও সার্কেল চীফকে বিরোধ নিষ্পত্তির সর্বময় ÿমতাপ্রদান করা হয়েছে। একদিকে, ১৯০০ সনের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধির ৪০বিধিমতে সার্কেল চীফের আদেশের বিরম্নদ্ধে রিভিশনের অধিÿÿত্র সংশিস্নষ্টজেলার জেলা প্রশাসক।
পÿামত্মরে, পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনের ৬৬ (২) ও ৬৬ (৩) ধারামতে সার্কেল চীফেরসিদ্ধামেত্মর বিরম্নদ্ধে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার এর নিকট আপীলদায়ের ও চূড়ামত্ম সিদ্ধামত্ম প্রদানের ÿমতা দেয়া হয়েছে, যার কারণে সামাজিকবিরোধ চূড়ামত্ম নিষ্পত্তির ÿÿত্রে এ অধিÿÿত্রের প্রশ্নে আইনী দ্বন্দ্বেরউদ্ভব হয়েছে, যা ন্যায় বিচারের পথে অমত্মরায়।
কার্বারী আদালতঃ
১৯০০সনের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসন বিধিতে কার্বারী রিয়োগ সম্পর্কে সুষ্পষ্ঠকোনো কিছু উলেস্নখ না থাকলেও পার্বত্য জেলা পরিষদ আইনের ৬৬(১) ধারাতেকার্বারী পদের স্বীকৃতি রয়েছে। পার্বত্য জেলাসমূহের আদিবাসী জনগোষ্ঠীরমধ্যে গ্রামাঞ্চলে কোন প্রকার দ্বন্দ্ব, বিরোধ, সামাজিক সমস্যা, নারীঘটিতকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য সচরাচর সংশিস্নষ্ট সার্কেলের রাজা বা চীফপ্রত্যেক মৌজায় প্রত্যেক পাড়া বা গ্রামের জন্য একজন করে কার্বারী নিয়োগ করেথাকেন। মৌজা হেডম্যানও তাঁর প্রশাসনিক ও সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনারসুবিধার্থে মৌজার কিছু কিছু পাড়ায় কার্বারী নিয়োগ করেন, যারা রাজা বা সরকারথেকে ভাতা পান না।
ব্যাখ্যাঃ
মৌজাহেডম্যান সাধারণতঃ গ্রাম কার্বারীদের সমন্বয়ে গঠিত সালিশী বোর্ডের মাধ্রমেউদ্ভূত বিরোধ/মামলা নিষ্পত্তি করে থাকেন। কার্বারী পর্যায়ে বিরোধ নিষ্পন্নহবার পর সংÿদ্ধ ব্যক্তি বা পÿহেডম্যান আদালতে শরনাপন্ন হলে মৌজা হেডম্যানসাধারণতঃ গ্রাম্য কার্বারীদের সমন্বয়ে গঠিত সালিশী বোর্ডের মাধ্যমেবিরোধ/মামলা নিষ্পত্তি করে থাকেন। উলেস্নখ্য যে, ১৯৮৯ সনের পার্বত্য জেলাপরিষদ আইনের ৬৬ ধারায় কার্বারী আদালতের মাধ্যমে বিরোধ নিষষ্পত্তির ব্যবস্থারাখা হয়েছে। বর্তমানে কার্বারীগণ সরকার হতে সম্মানী ভাতা পেয়ে থাকেন।কার্বারী আদালতের সিদ্ধামেত্ম সংÿদ্ধ ব্যক্তি প্রথমে হেডম্যান আদালতে, পরবর্তীতে সার্কেল চাফ আদালতের শরনাপন্ন হয়।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS